ভারতের মধ্যপ্রদেশের নন্দলেটা গ্রামের ১৮ বছর বয়সি ললিত পাতিদার, যিনি বিরল ‘ওয়্যারউলফ সিনড্রোম’-এ আক্রান্ত, এবার গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নিজের নাম লিখিয়েছেন। জন্ম থেকে ‘হাইপারট্রাইকোসিস’ নামক জিনগত ব্যাধিতে আক্রান্ত ললিতের শরীরে অতিরিক্ত লোম গজায়, যা তার মুখের ৯০ শতাংশ ঢেকে রাখে।
গিনেস রেকর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ললিতের ত্বকের প্রতি বর্গ সেন্টিমিটারে ২০১.৭২টি চুল রয়েছে — যা তাকে বিশ্বের অন্যতম লোমশ ব্যক্তি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, এই বিরল রোগে বিশ্বে প্রতি এক বিলিয়নে মাত্র একজন আক্রান্ত হন, আর মধ্যযুগ থেকে এখন পর্যন্ত এমন মাত্র ৫০টি ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে।
ললিত জানান, ছোটবেলায় স্কুলের বন্ধুরা তাকে ভয় পেত, কিন্তু ধীরে ধীরে তার আন্তরিকতা আর উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব তাদের ভুল ধারণা দূর করে। ললিতের ভাষায়, “আমি বাইরে থেকে আলাদা, কিন্তু ভেতরে আমি সবার মতোই।”
অনেকেই পরামর্শ দেন, সে যেন মুখের চুল সরিয়ে ফেলে। কিন্তু ললিত আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেন, “আমি আমার চেহারা পছন্দ করি এবং আমি এটা পরিবর্তন করতে চাই না।” তার এই ইতিবাচক মানসিকতা, নিজের প্রতি গ্রহণযোগ্যতা, এবং অদম্য মনোবল তাকে আরও অনুপ্রেরণামূলক করে তুলেছে।
বিশ্বের নজরে আসার পর ললিত বলেন, “আমি নির্বাক। কী বলব জানি না। এই স্বীকৃতি পেয়ে আমি সত্যিই খুশি।”
ললিতের গল্প হলো সমাজের প্রচলিত সৌন্দর্য ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করার, আত্মবিশ্বাস ও গ্রহণযোগ্যতার শক্তিশালী বার্তা দেওয়ার এক অনন্য উদাহরণ। এই কিশোর প্রমাণ করেছেন, প্রকৃত সৌন্দর্য শরীরের চেহারায় নয়, বরং আত্মার গভীরতায় লুকিয়ে থাকে।